দরজা

আমি এক খোলা দরজা

আমার এক প্রান্থে নির্জল মরুভূমি

ওপর প্রান্থে ঘন গভীর অরণ্য

কত মানুষ আসে যায়

কিছু তৃষ্ণার্ত প্রাণ আমায় ভেদ করে

মুক্তির খোঁজে ঘন অরণ্যে মিশে যায়

আবার কেউ বহুল আল্লাদ ভোগ করতে না পেরে

বালির চড়ে বিলীন হয়ে যায়

মধ্যরাতে মানুষের ভালোবাসার প্রকাশ গুলো

বেলুনের মতো ফুলে চুপসে যেতে দেখছি

মানুষ মাত্রই আবেগের যাযাবর

মনের পর্দায় বিষ তীর বিদ্ধ হলে

আত্মঘাতের পথ বেছে নেয়

আর আমি কেবলই এক ব্যর্থ দর্শক

আমার কাছে ভাষা নেই

না আছে আটকে রাখার শক্তি

শুধুই অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি ||

–  গৌরব মুখার্জী

দুঃস্বপ্ন

অনিয়মিতভাবে আসে আমার কাছে

এক নিরাকার মানুষ,

তাহাকে আমন্ত্রণ জানিয়া চিত্ত ভাসে

আতঙ্কপুরীর দ্বারে,

বুকের দপদপানি এক বিস্তার গতিতে

ক্রমশ বাড়ে,

শিহরণ জাগিয়ে চামড়ার দেহ রক্ষীরা

সজাগ দাড়িয়ে পরে,

নয়নের পর্দা পড়তেই চলচিত্র শুরু

সে যেন এক গূঢ় রাত্রির যাত্রা,

ভবিষ্যতকে শূলের শয্যায় চড়িয়া অতীতের আর্তনাদে

চলছে এক বাঘবন্দীর মরণ বাচন খেলা,

ক্রমশ গোলকধাঁধার ভেতরে গ্রাস করে

গ্রহণের রক্তাক্ত চাঁদের মতো,

আমার জাহাজ দোলে মরীচিকার উদ্দেশ্যে

কূটাভাসের জালে,

সে মায়াবী পিশাচ বা কাল ভৈরবী তে রূপান্তরিত

তখন আমার গলা শুকিয়ে কাঠ,

বিচলিত মন এখন অকূল পাথার

চক্ষু খুলতেই অন্তরে চির কেটে চলে যায় ||

-গৌরব মুখার্জী

আমি কেউ নই

আমাকে নিয়ে এত ভেবোনা

আমি কারুর জীবনেই কোনো অংশ নিতে চাইনা

আমাকে দরিদ্রের মতো ঘরের এক কোণায় পড়ে থাকতে দাও

অন্ধকারে আমার নিজের বলে কিছু নেই,

শুধুই পাশে থাকে এক কঠিন মন আর অসাড় দেহ

আমি কথা দিয়ে কথা রাখতে পারিনা

আমি অস্থায়ী, আমার মাথার উপর কোনো পাকা ছাদ নেই

অজ্ঞত পরিচয়ই আমার মূল শিকড়

বিষে ভর্তি আমার কলস, নিকটে এলেই আঘাত পাবে

আমার নেত্র দুটো পাথরে পরিণত হয়ে গেছে, তাতে লেশমাত্র অশ্রু ঝরেনা

আমাকে হারিয়ে যেতে দাও ||

– গৌরব মুখার্জী